মুম্বইয়ে ১০০ বছরের পুরনো বহুতল ভেঙে মৃত্যু হল সাত জনের। মঙ্গলবার
সকালে ডোংরি এলাকায়, একটি চার তলা বাড়ির একাংশ ধসে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে
খবর, ট্যান্ডেল স্ট্রিটের ওই বাড়িটিতে অন্তত ১৫টি পরিবার বাস করতেন। তাঁরা
সকলেই ওই ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে পড়েন। ইতিমধ্যেই দুই শিশু-সহ আট জনকে
উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের
সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মহারাষ্ট্রের ফড়ণবীস সরকার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ‘‘এ দিন সকাল ১১টা ৪০ নাগাদ আচমকাই বিকট
আওয়াজে ভেঙে পড়ে কেশরবাঈ নামের ওই বহুতলটি। তখন মনে হচ্ছিল যেন ভূমিকম্প
হচ্ছে। চারপাশে সকলেই তখন বাড়ি ধসে পড়েছে, বাড়ি ধসে পড়েছে বলে চিৎকার
করছিল।’’ দুর্ঘটনার পর প্রাথমিক ভাবে উদ্ধার কাজে হাত লাগান স্থানীয়
বাসিন্দারাই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা
বাহিনী (এনডিআরএফ)। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশও। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়
ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। দ্রুত আশপাশের বাড়িগুলিও খালি করে দেওয়া হয়।
আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাবিব হাসপাতাল ও জে জে
হাসপাতালে। মুম্বই পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন মহিলা-সহ
সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতরা জে জে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে উদ্ধারকাজ চালাতে বেগ পেতে হয়
উদ্ধারকারীদের। ঢোকার জায়গা না থাকায় ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরেই রাখতে হয়
অ্যাম্বুল্যান্স। প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তায় জল জমে থাকাতেও সমস্যা দেখা দেয়।
নতুন করে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ঘটনাস্থল থেকে আপাতত
দূরে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন
(বিএমসি) সূত্রে জানানো হয়েছে, ইমামবাড়া মিউনিসিপ্যাল সেকেন্ডারি গার্লস
স্কুলে খোলা হয়েছে ত্রাণশিবির। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে
এনডিআরএফের তিনটি দল।
এমন ভয়াবহ বহুতল দুর্ঘটনার পর উঠে আসছে বহু প্রশ্ন। প্রাথমিক ভাবে মনে
করা হচ্ছে, লাগাতার বৃষ্টির ফলে বহুতলের ভিত দুর্বল হয়েই এই দুর্ঘটনা
ঘটেছে। বাড়িটি আগে কেন সংস্কার করা হয়নি কেন, তা নিয়ে মহারাষ্ট্র হাউজিং
অ্যান্ড এরিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এমএইচএডিএ) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে
দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘বাড়িটি সংস্কারের কোনও
সদিচ্ছাই দেখায়নি এমএইচএডিএ। এমনকি, সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় টাকাও বরাদ্দ
করা হয়নি।’’ কারও বক্তব্য, ‘‘অনুমতির জন্য বিএমসির কাছে বহুবার আবেদন
করেলেও তা গ্রাহ্য হয়নি। কিন্তু, এবার আর ওদের জন্য অপেক্ষা করব না। আমরা
নিজেরাই পয়সা খরচ করে বাড়ি সংস্কার করব।’’
No comments:
Post a Comment